প্রকাশিত: ১৭/০৬/২০১৮ ২:৩৫ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:৪৯ এএম

হুমায়ুন কবির জুশান,উখিয়া ::
চট্রগ্রাম ফোর এইচ গ্রুপের চাকরীজীবি আব্দুল্লাহ ‍মুহাম্মদ সোহেল ভাই-বোন আত্নীয় স্বজনের সাথে ঈদ করতে এসে চরম কষ্টের কথা জানালেন, মহাসড়কে যানজটের কারণে সময়ের অপচয় হয়েছে। অন্যদিকে বাড়ির সামনে সড়কের দৃশ্য দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেছে।যেনতেনভাবে সংস্কারের কাজ আর অতি বৃষ্টিতে উখিয়ার অধিকাংশ আঞ্চলিক সড়কের বেহাল দৃশা। তেমনি উখিয়া সদর হাজির পাড়া সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঈদের ছুটিতে বেড়াতে আসা লোকজনের সীমাহিন কষ্ট পোহাতে হওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ তার প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে বিভিন্ন গন্তব্য থেকে এসেছেন। এই সড়ক দিয়ে বাড়ি যেতে তাদের পোহাতে হয়েছে চরম দুরভোগ। রাস্তা এতই খারাপ হয়েছে যে, গাড়ি নিয়ে বাড়ি যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি।স্থানীয়রা বলেছেন, সারা বছর সড়ক সংস্কার না করে ঈদ আর বৃষ্টি এলে হুড়োহুড়ি করে জোড়াতালি দিয়ে সড়ক মেরামত করা হয়। ফলে সেটা টেকসই বা স্থায়ী সমাধান হয় না। সময় মতো টেকসই সমাধানের উদ্যোগ না নেওয়ায় উখিয়ার অনেক সড়কের বেহাল দৃশ্য থেকেই যাচ্ছে। স্থানীয় কাজী জসিম উদ্দিন বলেন, ঠিকাদারের অবহেলার কারণে আজ উখিয়া সদর হাজির পাড়া সড়কের কাজ এগুচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের জরুরী ভিত্তিতে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। হাজির পাড়া এলাকার ছেলে সেনা সদস্য তৈয়ব বলেন, উথিয়া সদরের অত্যন্ত গুরুত্বপূণ এই সড়কের এমন দৃশ্য মেনে নেয়া যায় না। মৌলভী পাড়া গ্রামের সন্তান এডভোকেট আব্দুর রহিম বলেন, থানা সংলগ্ন সহকারি পুলিশ সুপারের বাসভবন ঘেষে হাজির পাড়া সড়ক দিয়ে মৌলভী পাড়া, কাজি পাড়া, খয়রাতি পাড়া, দোঁছড়িসহ এই হাজির পাড়া সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। স্থানীয় সাংবাদিক মাহমুদুল হক বাবুল বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন আসা যাওয়া করে সাংবাদিক, আইনজীবি, শিক্ষক, ডাক্তার, ব্যবসায়ীসহ স্কুল কলেজ পড়ুয়া শত শত ছাত্র-ছাত্রী। ঠিকাদারি কাজে স্থানীয় প্রভাবশালী সরকার দলীয় হওয়ায় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে না। উখিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র তামজিদ কবির বলেন, আমি বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে স্কুল ব্যাগ নিয়ে এই রাস্তায় একবার পড়ে গিয়েছিলাম। রাস্তা ঠিক না হওয়ায় আমাদের কষ্টের শেষ নেই। ডাক্তার মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, একজন রোগী নিয়ে ষ্টেশনে বা হাসপাতালে নিয়ে আসবে তার কোনো সুযোগ নেই। কাজি পাড়া এলাকার জুলফিকার আলী ভুট্রো বলেন, অনেক বছর পর স্বপ্নের এক বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছি, কিন্তু এই সড়ক দিয়ে রট, সিমেন্ট, বালি আনতে না পারায় ঘর তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। হাজির পাড়া এলাকার মাহবুব সওদাগর বলেন, উখিয়া ষ্টেশনে আসার একমাত্র রাস্তা এটি। পান সুপারি আম কাঠাঁলসহ বাজারে নিয়ে বিক্রি করার পণ্য সামগ্রী বাজারজাত করণে মানুষের কষ্টের অন্ত নেই। ভালুকিয়া পালং এলাকার মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, উখিয়া সদর কাজি পাড়া এলাকায় আমার বন্ধু ও হাজির পাড়া এলাকায় আমার অনেক আত্নীয়-স্বজন রয়েছে। প্রতি বছর ঈদে আমি সেখানে বেড়াতে যায়। এবারও যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু রাস্তা এতই খারাপ দেখে আর যাওয়া হয়ে উঠেনি। আমি অনতিবিলম্বে এই রাস্তা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। কেন্দ্রীয় ফেমাস সংসদের সভাপতি নুরুল কবির মাহমুদ বলেন, মৌলভী পাড়া এলাকায় আমার শাশুর বাড়ি রয়েছে, প্রতি বছর ঈদের দিনে আমি শাশুর বাড়িতে বেড়াতে যায়, এবার ঈদের একদিন পার হয়ে গেলেও এখনো যায়নি। শাশুর বাড়ির লোকজন আমার জন্যে অপেক্ষা করতেছে, কিন্তু রাস্তা খারাপের কারণে যাব কীনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি। পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, ফলিয়া পাড়া এলাকায় রাস্তা সংস্কার না করে ঠিকাদার পালিয়ে গেছে। এদিকে পাঁচ মাস ধরে খুড়াখুড়ি করে হাজির পাড়া এলাকার রাস্তা সংস্কারের নামে এতদিন ফেলে রাখা বা সংস্কারে দেরি দেখে আমরা হতাশায় মধ্যে রয়েছি। ঠিকাদারের খাম-খেয়ালী আর মেনে নেওয়া যায় না। ঠিকাদারি কাজে নিয়োজিত মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঈদের পর কাজ আবার শুরু করার কথা জানান। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উখিয়া উপজেলা নিবাহী অফিসার মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, দ্রুত কাজ শেষ করার তাগাদা দেয়া হয়েছে। এবং আমি নিজেই এই রাস্তায় গিয়ে দেখে এসেছি।

পাঠকের মতামত